মুন্সিগঞ্জ জেলার একমাত্র গির্জা- শুলপুর সাধু যোসেফ গির্জা সিরাজদিখান

শুলপুর সাধু যোসেফ গির্জা হচ্ছে মুন্সিগঞ্জ জেলার একমাত্র গির্জা। জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শুলপুর, বড়ইহাজী, মজিদপুর নিয়ে গঠিত শুলপুর সাধু যোসেফের ধর্মপল্লীতে এই গির্জাটি অবস্থিত। ধর্মপল্লীর প্রায় ৩ হাজার খ্রিষ্টানধর্মালম্বী এই প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা করে থাকেন।


ইতিহাসবিদদের মতে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামনে ১ম দিকে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ঢাকা জেলার নারিশা, ঝনকী এবং মৈনোটের নিকটবর্তী আমরাবাজ গ্রাম থেকে কিছু ক্যাথলিক খ্রীস্টভক্ত এখানে এসে বসবাস করতে শুরু করে। তখন বহু বছর যাবত এখানে আবাসিক ভাবে কোন যাজক ছিলো না।

বছরে ২-৩ বার অন্য স্থান থেকে যাজকগন এখানে এসে বসবাসরত জনগনের আধ্যাত্মিক যত্ন নিত। সাভারের দয়াপুর (মুশুরী খোলা) গির্জা থেকে পর্তুগীজ যাজকগন আসতেন হাসনাবাদ ও বান্দুরা হয়ে শুলপুরে। এদের মধ্যে ফাদার যোসিয়ে ও ফাদার রদোর নাম পাওয়া যায়। ১৮৫০ খ্রীস্টাব্দে শুলপুর বঙ্গীর ভিকার এপোস্টলিকের অধীনে আসে।


১৮৬৯ খ্রীস্টাব্দে জুন থেকে এখানে ১ম আবাসিক যাজক ছিলে ফা: পল তো ল্যগ্রী সি এস সি। ১৮৬২ খ্রীস্টাব্দে ইট সুরকির গাথনি ও ছনের চাল যুক্ত ১ম গির্জাটি স্থাপন করা হয়। ১৮৯৭ খ্রীস্টাব্দে ভুমিকম্পে গির্জাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১৯১৯-১৯২২ খ্রীস্টাব্দে গির্জাটি আবার সর্ম্পুন রুপে সংস্কার করা হয়। পরবর্তীতে ১১ই এপ্রিল ১৯৯৭ খ্রীঃ আর্চবিশপ মাইকেল ডি রোজারিও বর্তমানের নব নির্মিত গীর্জাটি তৈরি করেন।

ঢাকার খুব কাছে ঐতিহাসিক গির্জাটির অবস্থান দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যাবে। ঢাকা থেকে সিরাজদিখান বাস চলাচল করে যাত্রাবাড়ি থেকে সিরাজদিখান পরিবহন এবং গুলিস্তান, নয়াবাজার থেকে ডিএম পরিবহনের বাসে সিরাজদিখান বাস স্ট্যান্ড নেমে সেখান থেকে অটো বা রিক্সায় অল্প সময়েই গির্জা এলাকায় পৌছোনো যায়। একটু সময় নিয়ে গেলে ঘুরে আসতে পারেন সিরাজদিখান উপজেলায় আরো কিছু ঐতিহাসিক স্থান থেকে। এর খুব কাছে কেয়াইন ইউনিয়নের কোটগাঁও বাদশা শাহী মসজিদ খানা। শেখরনগর রাজা শ্রীনাথ রায়ের বাড়ি সাথে বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন শেখর নগর কালী মন্দির অথবা লালন আখড়া বাড়ি পদ্ম হেম ধাম থেকে। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মুখরোচক খাবারের জন্য খুবই বিখ্যাত। পাতক্ষীরা নামে এক বিশেষ মিষ্টি পাওয়া যায়, যা ভীষণ প্রসিদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী। এই পাতক্ষীরা অল্প কিছু দিন আগে জিআই স্বকৃতি পেয়েছে।



----- বাউল পানকৌড়ি.....

মন্তব্যসমূহ